নবীনগর উপজেলা

নবীনগর উপজেলা আয়তন: ৩৫৩.৬৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৪৫´ থেকে ২৪°০০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫০´ থেকে ৯১°৫১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর, আশুগঞ্জ ও রায়পুরা উপজেলা, দক্ষিণে মুরাদনগর উপজেলা, পূর্বে কসবা ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর উপজেলা, পশ্চিমে বাঞ্ছারামপুর ও রায়পুরা উপজেলা।

জনসংখ্যা ৪২০৩৮৩; পুরুষ ২০৮৩৪৭, মহিলা ২১২০৩৬। মুসলিম ৩৮৪৬৫৭, হিন্দু ৩৫৬৮২, বৌদ্ধ ৩০ এবং অন্যান্য ১৪।

নবীনগর উপজেলা | ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | বাংলাদেশ

জলাশয় মেঘনা, পাগলা ও বুড়ি নদী।

প্রশাসন নবীনগর থানাকে ২৪ মার্চ ১৯৮৩ সালে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।

তথ্যঃ

নবীনগর উপজেলা | ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | বাংলাদেশ

নবীনগর উপজেলা | ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | বাংলাদেশ

নবীনগর উপজেলা আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শাহাপুর মসজিদ (১৮৭৬), মুন্সেফ আদালত (১৮৮৪), দক্ষিণ পাড়া মসজিদ (আহাম্মদপুর), বিদ্যাকুট সতীদাহ স্মৃতি মন্দির, নবীনগর মঠ, পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ি, কামিনী বালা দেবী আনন্দ আশ্রম, নাটঘর শিবমূর্তি (সপ্তম শতাব্দী), কষ্টি পাথরের বিষ্ণুমূর্তি (সপ্তম শতাব্দী, বাঘাউড়া গ্রাম), কষ্টি পাথরের বিষ্ণুমূর্তি (সপ্তম শতাব্দী, সাতমোড়া গ্রাম)।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এ উপজেলা ২ নং সেক্টরের আওতাধীন ছিল। মুক্তিযুদ্ধে এই অঞ্চলের ২৪০০ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন এবং ৩৩ জন শহীদ হন। নবীনগর সদর ও ইব্রাহীমপুর যোগীধারা ব্রিজ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম রণাঙ্গন।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ৩ (খারঘর, নবীনগর পাইলট হাইস্কুল মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে, নবীনগর  থানা কম্পাউন্ডের দক্ষিণাংশে)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৫৪৭, মন্দির ২৬, মাযার। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: দক্ষিণ পাড়া মসজিদ (আহাম্মদপুর), শাহাপুর মসজিদ, বিদ্যাকুট সতীদাহ স্মৃতি মন্দির, হযরত করিম শাহ মাযার, হযরত ওয়ালী শাহ মাযার, হযরত খালেক শাহ চিশতির মাযার, হযরত আদু শাহ মাযার।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৭.৯%; পুরুষ ৪০.২%, মহিলা ৩৫.৬%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৯৯, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২, মাদ্রাসা ৫৮৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নবীনগর সরকারি কলেজ (১৯৬৯), নবীনগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৬), শ্যামগ্রাম মোহনী কিশোর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০০), বিদ্যাকুট অমর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), কৈতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  সাপ্তাহিক তিতাসের খবর (প্রকাশকাল ২০০৪)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২২, শিল্পকলা  একাডেমী ১, সিনেমা হল ৪, খেলার মাঠ ২৫, শিল্পীগোষ্ঠী ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৩.৫১%, অকৃষি শ্রমিক ২.৪১%, শিল্প ০.৯৬. ব্যবসা ১৬.৮৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৫৬%, চাকরি ৭.৫৪%, নির্মাণ ১.৪০%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৩, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৮.৯৪% এবং অন্যান্য ৬.৫০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৮.৯৫%, ভূমিহীন ৪১.০৫%। শহরে ৪৭.৩৮% এবং গ্রামে ৬০.২১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, ধনিয়া, মসুরি, মাষকলাই, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, তিল, তিসি, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, পেঁপে, কলা, নারিকেল, সুপারি।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২৬ কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ১২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০.৫০ কিমি; নৌপথ ৭৫ নটিক্যাল মাইল।

শিল্প ও কলকারখানা স’মিল, বরফকল।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫১, মেলা ১০। নবীনগর বাজার, বাঙ্গরা বাজার, বাইশমৌজা বাজার, শ্যামগ্রাম বাজার, শিবপুর বাজার ও ভোলাচং বাজার এবং নবীনগর মেলা, ভোলাচং বৈশাখী মেলা, রাধানগর বৈশাখী মেলা, শ্রীঘর কালী মেলা ও নাটঘর মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, পাট, ধনিয়া, কলা, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩০.৫৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.২৯%, পুকুর ২.০২%, ট্যাপ ০.৫৯% এবং অন্যান্য ৩.১০%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৮.৫৬% (গ্রামে ৫৬.১৫% ও শহরে ৮০.৭৩%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩২.৪১% (গ্রামে ৩৪.৬৩% ও শহরে ১২.০৪%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.০৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ২, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ৮, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৪, ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ৫, ক্লিনিক ২০, রেডক্রস মাতৃসদন ১, পশু হাসপাতাল ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৮৮ ও ২০০৪ সালের বন্যায় এ উপজেলার ফসল ও গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২০০১ সালের ১ মে প্রচন্ড টর্নেডোর ফলে মেঘনা নদীতে দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চ নিমজ্জিত হয়ে ২৫০০ যাত্রী নিহত হয়।

নবীনগর উপজেলা | ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | বাংলাদেশ

Leave a Comment