ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উপজেলা

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উপজেলা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উপজেলা:-

আখাউড়া

আখাউড়া উপজেলা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ উভয়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক শহর। আখাউড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার প্রাণকেন্দ্র। আখাউড়া উপজেলার আয়তন ৯৮.০৫ বর্গ কিলোমিটার (২৪,২২৮ একর)। এ উপজেলার উত্তরে বিজয়নগর উপজেলা, দক্ষিণে কসবা উপজেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ও কসবা উপজেলা।

আশুগঞ্জ

আশুগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটি মেঘনা নদীর বদ্বীপ। এর ঊর্ধ্বতা হল ১০ মিটার (৩৬ ফুট)। শহরটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অতি পরিচিত। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র হলো আশুগঞ্জ। মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত আশুগঞ্জ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। ঢাকা থেকে ৯০ কিলোমিটার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর থেকে ২৪ কিলোমিটার দুরত্বের মাঝামাঝি স্থানে এ উপজেলার অবস্থান।

আশুগঞ্জ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পনগরী, নদীবন্দর ও বাণিজ্য শহর। জাতীয় অর্থনীতিতে আশুগঞ্জ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এখানে দেশের বেশ কয়েকটি উল্লে­খযোগ্য স্থাপনা তথা শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভারী শিল্প ছাড়াও আশুগঞ্জ বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্য শহর হিসেবে দেশে-বিদেশে ব্যাপক পরিচিত।

ব্রিটিশ শাসনামলে পাটের বড় বাজার হিসেবে আশুগঞ্জের পরিচিতি ছিল। তখন ইংরেজদের পাট ক্রয় কেন্দ্র আশুগঞ্জ ছিল বিধায় তাদের পদচারণায় মুখরিত ছিল আশুগঞ্জ। আশুগঞ্জের পাট সেসময় ইংল্যান্ডের শিল্পনগরী ডান্ডিতে রপ্তানি হতো। বর্তমানে ধান ও চাউলের ব্যবসার জন্য আশুগঞ্জ ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।

পাশাপাশি লালপুরের শুটকি শিল্প দেশের ব্যবসা- বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছে। আশুগঞ্জে ছোট-বড় চার শতাধিক চাতাল ও অটো রাইস মিল রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই আশুগন্জে ধান-চাউলের এ বিশাল বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়া দেশের অন্যতম বৃহৎ সেচ প্রকল্প ‘‘আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্প’’ এখানে অবস্থিত। ভারতীয় ট্রানজিটের নৌবন্দর হিসেবে আশুগঞ্জকে ব্যবহারের জন্য ভারতীয় উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আশুগঞ্জের গুরুত্ব আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে।

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উপজেলা
সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতু – ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা

 

কসবা

কসবা উপজেলা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা এবং উপজেলা। কসবা উপজেলার আয়তন ২০৯.৭৬ বর্গ কিলোমিটার (৫১, ৮৩২.৮ একর)। এই উপজেলার উত্তরে তিতাস নদী, আখাউড়া উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা, দক্ষিণে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিমে নবীনগর উপজেলা, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা।

নবীনগর

নবীনগর উপজেলা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। নবীনগর উপজেলার আয়তন ৩৫০.৩৩ বর্গ কিলোমিটার (৮৬,৫৬৮ একর)। এটি আয়তনের দিক থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা। এ উপজেলার উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা, আশুগঞ্জ উপজেলা ও নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা, দক্ষিণে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ও কসবা উপজেলা, পশ্চিমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ও নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা অবস্থিত।

নাসিরনগর

নাসিরনগর বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি উপজেলা।বাংলাদেশের হাওর বেষ্টিত উপজেলার একটি। কথিত আছে, হযরত শাহ জালাল (রহ.) সিলেটের গৌড় গোবিন্দ রাজার রাজ্য আক্রমণ এবং ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য যাওয়ার পথে সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীন এখানে অবস্থান করেছিলেন। তার নামানুসারে এই এলাকার নাম নাসিরনগর রাখা হয়।

এ ইউনিয়নের নাম থেকেই প্রথমে থানা এবং পরবর্তীতে নাসিরনগর উপজেলার নামকরণ করা হয়। অন্য একটি জনশ্রুতি হল, মোগল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে ঈশা খাঁ বংশের জনৈক মজলিশ গাজীকে সরাইল পরগণার দেওয়ান নিযুক্ত করা হয়। সেই বংশের জনৈক নাসির মাহমুদ দেওয়ানের নামানুসারে নাসিরনগরের নামকরণ করা হয়েছে।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

বাঞ্ছারামপুর

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আয়তন ১৮৭.৩১ বর্গ কিলোমিটার (৪৬,২৮৫ একর)। এ উপজেলার উত্তরে নরসিংদী জেলার নরসিংদী সদর উপজেলা, দক্ষিণে তিতাস নদী ও কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলা, পূর্বে নবীনগর উপজেলা ও কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা, পশ্চিমে মেঘনা নদী, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা ও নরসিংদী জেলার নরসিংদী সদর উপজেলা।

বিজয়নগর

বিজয়নগর উপজেলা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। বিজয়নগর উপজেলার আয়তন ২২১.১৭ বর্গ কিলোমিটার (৫৪,৬৫৩ একর)। বিজয়নগর উপজেলার উত্তরে সরাইল উপজেলা ও মাধবপুর উপজেলা,দক্ষিণে আখাউড়া উপজেলা, পূর্বে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা, পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা।

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উপজেলা
গঙ্গাসাগর দিঘী – ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার আয়তন ২৩৭.৩৪ বর্গ কিলোমিটার (৫৮,৬৪৯ একর)। এ উপজেলার উত্তরে সরাইল উপজেলা ও নাসিরনগর উপজেলা, দক্ষিণে আখাউড়া উপজেলা, কসবা উপজেলা ও নবীনগর উপজেলা, পূর্বে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা ও ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিমে নবীনগর উপজেলা ও আশুগঞ্জ উপজেলা।

সরাইল

সরাইল উপজেলা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা। সরাইল উপজেলা আয়তন ২১৫.২৮ বর্গ কিলোমিটার (৫৩,১৯৬ একর)। উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান সরাইল উপজেলা ২৪°০০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হতে ১২ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। এ উপজেলার উত্তরে নাসিরনগর উপজেলা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা, পূর্বে বিজয়নগর উপজেলা ও আশুগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে মেঘনা নদী, কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা ও বাজিতপুর উপজেলা। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মেঘনা,তিতাস ও লাহুর নদী। সরাইল উপজেলা সদরের আয়তন ১৪.০৩ বর্গ কিলোমিটার। এটি ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত।

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment